কলমে সুমন দে
ছোটোবেলা থেকে দেখে আসছি বছরের নির্দিষ্ট দিনে মেদিনীপুরে বাংলাদেশের ট্রেন আসে। তাতে চড়ে ঊরস মেলা দেখতে আসেন অনেক ভিনদেশী মানুষ। সঠিকভাবে বলতে গেলে ১৯০৩ সাল থেকে প্রতিবছর ৪ঠা ফাল্গুন বাংলাদেশের রাজবাড়ি থেকে মেদিনীপুর আসে একটি ট্রেন। পূন্যার্থীদের নিয়ে বড়পীরের ঊরস উৎসব হয়ে ওঠে জমজমাট। এই বড়পীর ঊনবিংশ শতকে ইরাক থেকে এদেশে এসেছিলেন ধর্মপ্রচার করতে। নাম হজরত সৈয়দ শাহ মেহর আলি আল কাদরি আল বাগদাদি। এনার মাজারে চাদর চড়াতে বাংলাদেশ তো বটেই, গোটা পশ্চিমবঙ্গ থেকেও প্রায় পাঁচ লাখ ,মানুষ প্রতি বছর মেদিনীপুর আসেন। চারদিনের এই মেলা ছোট্ট শহরের চরিত্রটাই বদলে দেয়। পথে ঘাটে অনুসন্ধিৎসু মুখের মানুষের সমাগম। চায়ের দোকানে আলাপচারিতা চলে এপার বাংলার সঙ্গে ওপার বাংলার। সম্পর্ক বাড়ে, সম্বন্ধ গাঢ় হয়। নজরে পড়ে বাংলাদেশী মানুষজনের অ্যালুমিনিয়ামের হাঁড়ি-বাসনপত্র কেনার উৎসাহ। এই কদিন মেদিনীপুর শহরের বাজার-দোকানে বাংলাদেশের টাকাও চলে।
বাংলাদেশ থেকে আসা ‘পিলগ্রিম এক্সপ্রেস’ নয় নয় করে একশ আঠেরো বছরে পা দিল। এভাবেই শতাব্দী পার করে এই ট্রেন বাংলাদেশের রাজবাড়ি আর মেদিনীপুরকে একসুতোয় বেঁধে রেখেছে। মাঝখানে মাত্র চার বার বন্ধ ছিল এর যাত্রা। ১৯৬৫ সালে ভারত-পাক যুদ্ধ, ১৯৭১ সালে বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধ, ১৯৯২ সালে বাবরি মসজিদ ধ্বংস কারণে এবং ১৯৯৪ সালে সুরাটে প্লেগ মহামারীর কারণে ট্রেন পরিষেবা বন্ধ ছিল। এছাড়া দেশভাগেরও প্রভাব পড়েনি এই ট্রেনের যাত্রা পথে। বড়পীরের মিলনমেলায় ‘পিলগ্রিম এক্সপ্রেস’ হল জীবনরেখা। চলতে থাকুক এই ট্রেন, মিলতে থাকুক মানুষজন। বাড়তে থাকুক পড়শি দেশের সঙ্গে ভালোবাসা।
Author Profile

Latest entries
EXCLUSIVE NEWS3 weeks agoপদ্ম-দুর্গে ঘাসফুলের শিকড় মজবুত করতে যাচ্ছেন অভিষেক, গঙ্গারামপুর স্টেডিয়ামে চলছে শেষ লগ্নের প্রস্তুতি!
EXCLUSIVE NEWS3 months agoপুজোয় বয়স্করা কীভাবে আটকাবেন মারণ-রোগকে? শ্রীরামপুর আইএমএ দিল তারই হদিশ!
EXCLUSIVE NEWS3 months agoদলীয় পতাকার বাইরে ভাবতে শিখল আরামবাগ, সাধারণ পড়ুয়াদের ধর্ষণ বিরোধী স্লোগান আছড়ে পড়ল রাজপথে!
EXCLUSIVE NEWS4 months ago‘একুশে বামফ্রন্ট’! নিছক ফেসবুক গ্রুপ নয়, এ যেন ফ্যাসিস্ট মানসিকতার বিরুদ্ধে যৌথতার ব্যারিকেড!