কলমে কৌশিক দত্ত
“বাজল তোমার আলোর বেণু মাতল যে ভুবন।” সুপ্রীতি ঘোষের কণ্ঠে এই গান ও বীরেন্দ্রকৃষ্ণ ভদ্রের দরাজ কণ্ঠের মহিষাসুরমর্দিনী ছাড়া বাঙালির মহালয়া আজও অসম্পূর্ন। আর মহালয়ার সঙ্গে রেডিও আষ্টেপৃষ্ঠে জড়িয়ে গিয়েছে। বাণিজ্যিকভাবে রেডিওর পথচলা শুরু বিশ শতকের গোড়ার দিকে। ভারতে তার আগমন ঘটে আরও বেশ কিছুটা সময় পরে। এক সময় মানুষের বিনোদনের মূল উপাদান ছিল এই রেডিও।
ক্রমাগত সময়ের, সমাজের, প্রযুক্তির অগ্রগতিতে সেই বিনোদনের উপকরণের বিবর্তন ঘটেছে টিভিতে, টিভি থেকে স্মার্ট মোবাইল ফোনে। কিন্তু এতকিছুর পরেও রেডিও আজ বেঁচে রয়েছে। রেডিও আজও বিরাজ করে বাঙালির মনের অন্দর মহলে, বাঙালির নস্টালজিয়ায়। কারণ রেডিও ছাড়া বাঙালির মহালয়া অসম্পূর্ন। আর মহালয়া ছাড়া বাঙালির দুর্গা পুজো অসম্পূর্ন। কুমোরটুলিকে আমরা চিনি ঠাকুরের প্রতিমা গড়ার কারণে। এই কুমারটুলির সরু গলির ছোট ছোট স্টুডিওগুলোর মধ্যেই রয়েছে এক ছোট্ট রেডিও মিউজিয়াম এবং রয়েছেন কলকাতার রেডিওম্যান অমিত রঞ্জন কর্মকার। এক চিলতে একটি ছোট্ট দোকান ঘরে কাজ করেন অমিতবাবু। সেখানেই সাজানো রয়েছে পুরানো থেকে নতুন, একের পর এক রেডিওর মডেল। ১৯৬৭ সালে অমিতবাবুর বাবা দোকানটি চালু করেন যা আজও অমিতবাবু চালিয়ে যাচ্ছেন।
বুশ, মারফি, টেলিফাঙ্কেন, ফিলিপস থেকে শুরু করে এক সময়ের প্রায় সমস্ত বড়ো বড়ো ব্র্যান্ডের রেডিও তার দোকানে এখন বর্তমান। এর মধ্যে সবচেয়ে পুরনোটি ১৯৪৪ সালের তৈরি। মহালয়ার কথা উঠতেই অমিতবাবুর বললেন, “এক সময়ে রাত তিনটে পর্যন্ত দোকানের বাইরে লাইন থাকত। কারণ ভোর চারটের সময় রেডিওতে মহিষাসুর মর্দিনী সম্প্রচার হবে। তার আগে রেডিও সারাতে না পারলে মহালয়াটাই মাটি।” তিনিও জানেন রেডিওর স্বর্ণযুগ আর ফিরবে না। এখন যারা রেডিও সারাতে আসেন তারা অধিকাংশ বাবা বা দাদুর রেডিও নিয়ে আসেন, মূলত মহালয়াতে মহিষাসুরমর্দিনী শোনার জন্য। ক্রমশঃ স্মার্টফোনের দাপটে কোণঠাসা রেডিও। কিন্তু অমিত রঞ্জন কর্মকারদের মতো কিছু মানুষের জন্য হয়তো রেডিওর অবসান ঘটবে না।
Author Profile

Latest entries
Dating Tips3 months agoThe Ultimate Guide To Online Dating
EXCLUSIVE NEWS12 months agoবাংলার সরকারী পদে রাজ্যের ভূমিপুত্র সংরক্ষণের দাবীতে হুগলি জেলা বাংলা পক্ষ নামল রাস্তায়
EXCLUSIVE NEWS2021.01.05পদ্ম-দুর্গে ঘাসফুলের শিকড় মজবুত করতে যাচ্ছেন অভিষেক, গঙ্গারামপুর স্টেডিয়ামে চলছে শেষ লগ্নের প্রস্তুতি!
EXCLUSIVE NEWS2020.10.13পুজোয় বয়স্করা কীভাবে আটকাবেন মারণ-রোগকে? শ্রীরামপুর আইএমএ দিল তারই হদিশ!